সিদ্ধান্ত নিতে চিন্তা ভাবনার গুরুত্ব বোঝাতে কিশোর ক্লাসিকস

কখনো কখনো অল্পতেই সবকিছু সামলে নেওয়া যায় আবার কখনো এমন কঠিন অবস্থার সৃষ্টি হয় যে মানুষ হতাশ হয়ে পড়ে।অন্যদের মতো একজন উদ্যোক্তাকেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়।বিশেষ করে যারা নারী উদ্যোক্তা,তাদের জন্য পরিবার এবং সমাজের বিভিন্ন রীতিনীতি এবং দায়দায়িত্ব পালন করে তবে নিজের বিজনেস সামলাতে হয়।

সামনে থাকা মানুষটাকে ইম্প্রেস করতে চাইলে  আমাদের বাচনভঙ্গি হতে হবে সুন্দর।কিশোর ক্লাসিকস সিরিজ একজন উদ্যোক্তাসহ যেকোনো মানুষের কথা বলায় এনে দিতে পারে অনাবিল সৌন্দর্য্য।

আত্মজ্ঞান না থাকলে একটা মানুষ যে নিজের সম্পর্কে বেশ উদাসীন,তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।আর তার এই অস্পষ্ট মানসিকতা তাকে জীবনে এগিয়ে রাখার বদলে পেছনে টেনে ধরে।একজন মানুষকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়,আপনি নিজেকে কতটুকু বুঝতে পারেন?

সমজাতীয় পণ্য নিয়ে কাজ করা চ্যালেঞ্জ হলেও আমি মনে করি মার্কেটিংয়ের মূল কার্যক্রম একে ঘিরেই তৈরি হয়ে থাকে। তাই আপনার প্রতিযোগিকে প্রতিদ্বন্দ্বী না ভাবে আপনার কোম্পানির মার্কেটেং পলিসি কিভাবে তার মার্কেটিং পলিসিকে টপকাতে পারে সেদিকে বেশি খেয়াল দেয়া উচিৎ।

অনেকে নিজেদের ব্যবসাকে অনলাইনে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। আমার আলোচনার মূল উদ্দেশ্যই ছিল পরিবেশ এবং এর পরিবর্তন কিভাবে মার্কেটিং তৈরি করতে পারে তা বুঝানোর জন্য। যারা এই বিষয়গুলো বিবেচনা করে মার্কেট পরিচালনা করতে পারে তারা এগিয়ে যাবে।

কোম্পানিগুলো যা করেন তা হচ্ছে, তাদের যে রিপিট কাস্টমার থাকেন তাদেরকে কোম্পানির পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের অফার এবং সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকেন এতে করে এক ধরনের টার্গেট কাস্টমার বেইজ তৈরি হয়ে যায় যার ফলে সেই কাস্টমাররা পূণরায় কেনাকাটা করতে আগ্রহ প্রকাশ করে।

একসাথে কাজ করলে অল্প সময় আর বাজেটে সাফল্য পাওয়া যায়। প্রচারণাও বাড়ানো যায় বিনামূল্যে বা নাম মাত্র মূল্যে। ধরে নেওয়া যাক দশজন তাঁতির সাক্ষাৎকার নেওয়ার সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে উদ্যোক্তারা। এরজন্য প্রয়োজন পরিকল্পনা এবং ক্যামেরা। এখানে যে বাজেট প্রয়োজন হবে তা সবাই মিলে ভাগ করে নেওয়ার কারণে চাপ কমে যাবে। কাজটাও সহজ ভাবে সম্পন্ন হবে।

ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সকল শ্রেণি পেশা মানুষের আইটিতে দক্ষতা থাকার সমান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাড়িয়েছে। আইটিতে যার যত বেশি দখল থাকবে সে তত সহজ ভাবে সুবিধা ভোগ করতে পারবে। নিজেদের ব্যবসার সকল কার্যক্রম অল্প সময়ে নির্ভুল ভাবে সম্পন্ন করার জন্য আইটিতে দক্ষ হওয়ার পাশাপাশি আপডেট থাকতে হয় উদ্যোক্তাদের।

একটি পণ্য আকর্ষণীয় এবং গ্রহণযোগ্য করে তুলতে সাহিত্যের শিক্ষার্থীরা বেশি ভূমিকা রাখে। কারণ তারা প্রচুর গল্প, উপন্যাস, নাটক, সিনেমা বিশ্লেষণের কারণে বাস্তব জীবনের অনেক কিছুর সাথে সামঞ্জস্য খুঁজে পায়। সে সাথে বিভিন্ন পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারে। মানুষের আবেগ ও মুহূর্তগুলোর বর্ণনা শিখতে পারে। এই জ্ঞান ও দক্ষতাগুলো কাজে লাগিয়ে তারা মানুষের সাথে মিশতে পারে এবং কোন কিছু কেনার জন্য আগ্রহী করতে পারে।

বহির্বিশ্বে বিল পরিশোধের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি থাকলেও বাংলাদেশ তার বিপরীত। আসলে এদেশের পুরো অনলাইন কেনাকাটার পদ্ধতিটাই ভিন্ন। যেমন অন্যান্য দেশের মানুষ কেনাকাটা করে অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ কেনাকাটা করে ফেসবুকে। আবার তারা অগ্রিম বিল পরিশোধের চেয়ে পণ্য হাতে পাওয়ার সময় বিল পরিশোধ করতেই আগ্রহী। বাংলাদেশের অনলাইন ক্রেতারা মনে করেন ক্যাশ অন ডেলিভারি উভয় পক্ষের জন্যই নিরাপদ একটি মাধ্যম।

যেসব এফ-কমার্স বা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কাস্টমার ডাটা মাত্র ১০০ বা ১ হাজার। তারা চাইলে কাস্টমারের সব ধরণের বিশেষ দিনগুলো নোট রাখতে পারে এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করতে পারে। এছাড়াও ক্রেতার চাহিদা, রুচি, বয়স, ধর্ম সহ সবকিছু নোট রাখার মাধ্যমে তাদের বিশেষ অফার, প্যাকেজ, পণ্য অফরা দেওয়া সহ সারপ্রাইজ দেওয়া যায়।

শূন্য থেকে ই-কমার্স উদ্যোগ শুরু করতে পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি অর্গানিক ভাবে অর্ডার পেতেও দারুণ ভূমিকা রাখে। ক্রেতারা অনলাইন ‘আস্থা ও বিশ্বাস’ এর অভাবে কেনাকাটা করতে ভয় পায়। নিজের পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং শক্ত করার মাধ্যমে উদ্যোক্তারা ক্রেতাদের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গাতে নিজের অবস্থান শক্ত করতে পারেন।

শুধু নিজের উদ্যোগ বা পণ্যে গুরুত্ব না দিয়ে তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন, পুরো দেশি পণ্যের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে। সমগ্র দেশি পণ্যের উদ্যোক্তারা কীভাবে ভালো করতে পারে, কোন দিকে তারা গুরুত্ব দিতে পারে এসব নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলছেন অনেকেই।

সবসময় নতুনত্বকে গ্রহণ করতে হবে। এফ-কমার্স ব্যবসা গুলো একসময় ছিল পেজ নির্ভর। এরপর হয়েছিল গ্রুপ নির্ভর। আর এখন তা প্রোফাইল নির্ভর। এভাবেই আসলে পরিবর্তন হতে থাকে চাহিদা এবং তৈরি হয় নতুন সম্ভাবনা। ঠিক তেমনি ভাবে ক্রেতার পোশাক, খাবার সহ সবকিছুতে পরিবর্তন আসে। তাই তাদের রুচি, চাহিদা ও আগ্রহ বুঝে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোর মধ্যে দেশে ফেসবুক সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫ কোটিরও বেশি। প্রত্যেক ব্যক্তি তার ফেসুবক প্রোফাইলে সর্বোচ্চ ৫ হাজার বন্ধু যুক্ত করতে পারে। তবে ফলোয়ার বা অনুসারি যুক্ত হতে পারে অগণিত। তাই বন্ধু তালিকায় কাউকে যুক্ত করতে একটু সচেতন থাকতে হবে। অর্থাৎ ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করতে হবে।

কাজ করতে গেলে, প্রতিদিন নতুন কিছু মানুষের সাথে পরিচয় হয়। এই পরিচিত মানুষের মাঝে কেউ থাকে ক্রেতা আর কেউ থাকে আসে পাশের প্রতিযোগী ব্যবসায়ী। দিন শেষে সবাইকে নিয়েই কাজ করতে হয় ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে। প্রতিযোগী সবার উদ্দেশ্য যদিও একটাই - সীমিত বা ক্রমবর্ধমান ক্রেতাকে নিজের দীর্ঘমেয়াদি ক্রেতা বানানো কিন্তু এর মানে এই না যে নিজের ব্যবসায় ও ক্রেতা বৃদ্ধির জন্য অন্য ব্যবসায়ীকে নিচু করা যাবে!