
ফ্যাশনে বাড়ছে গামছার কদর
বাঙালিরা দিনে যেসব অনুষঙ্গ ব্যবহার করে তারমধ্যে গামছা একটি। হাত ধোয়া থেকে শুরু করে গোসলখানা পর্যন্ত সর্বত্র রয়েছে গামছার প্রচলন। মুখ মোছতেও কেউ কেউ ভরসা করেন গামছায়।
এটি এমন একটি অনুষঙ্গ যা ছোটবড় সকলের ব্যবহার্য। ফ্যাশনেও বাড়ছে গামছার কদর। তাই গামছাতে এসেছে বাহারি নকশা ও বৈচিত্র। তবে বেশি কদর দেশি তাঁতের গামছার।
দেশের ৬০ জেলায় বহুকাল থেকে উৎপাদন হয় তাঁত পণ্য। শাড়ি, ওড়নার পাশাপাশি গামছাও বুনেন তাঁতিরা। তাঁতের গামছা হয় তা আমার কাছে ছিল অজানা। সম্প্রতি মানিকগঞ্জের তাঁত পল্লিতে একাধিকবার যাওয়ায় দেখা মিলের গামছার। সুযোগ পেয়ে একটা গামছা সংগ্রহ করি। সরু এবং ব্যবহারেও বেশ আরামদায়ক। ফেসবুকের কল্যাণে জানতে পারি মনিপুরী, নোয়াখালী, দিনাজপুর, মুন্সিগঞ্জে ও হালুয়াঘাটের গামছা নিয়ে। সুযোগ পেয়ে অনলাইনে অর্ডার দিয়ে আমার এক কাস্টমারকে উপহার দিয়েছি মনিপুরী গামছা। তার খুশির মাত্রা দেখে আমি আপ্লুত। তাই বুঝতে পারলাম দেশি গামছা উপহারেও সেরা।
গামছা ঠাই করে নিয়েছে এ প্রজন্মের ফ্যাশনে। বর্তমানে মানুষ বিভিন্ন স্টাইলে ব্যবহার করছে গামছা। আবার কেউ কেউ গামছা দিয়ে তৈরি করছেন নানান পণ্য। পাগড়ি, স্কার্ট, ব্লাউজ, গাউন, শাড়ি থেকে শুরু করে নানা ভাবে ব্যবহার করছে ফ্যাশন সচেতন নারীরা। এতে কদর বাড়ছে দেশি গামছার।
গামছার প্রচার ও ব্যবহার বাড়াতে নারীর ভূমিকাই বেশি। তারা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন গামছা বা গামছার তৈরি পোশাকে। সম্প্রতি ফেসবুকে গামছার শাড়িতে দেখেছি বেশ কয়েকজনকে। তাদের মধ্যে একজন আফরোজা চৌধুরী সিমা। এই নারীর মতে, দিনাজপুরের ’গামছা শাড়ি’ খুবই আরামদায়ক। ওজনেও হালকা। শাড়ির বর্ণনায় জানতে পারি শাড়ির আঁচলে ব্যবহার হয়েছে গামছা।
ফারিহা নাজনীন নিজুম একজন দেশি পণ্যের উদ্যোক্তা। মূলত নারীদের পোশাক নিয়ে কাজ করেন তিনি। সম্প্রতি ক্রেতার চাহিদা পূরণ করতে হালুয়াঘাটের গামছা দিয়ে ‘লং স্কার্ট-টপস’ তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
খাতুনে জান্নাত আশা ফেসবুক পোস্টে লিখছেন, আমার কাছে ফ্যাশন তাই, যা আমি আরাম ও আত্মবিশ্বাসের সাথে ব্যবহার করতে পারি। দেশের হ্যান্ডলুম তাঁতের গামছা আসলে অসাধারণ। পোশাকের সাথে মিলিয়ে ব্যবহার করা যায়।
লেখকঃ ফ্রিল্যান্সার লেখক ইপ্রফিট ডটকম এবং আওয়ার শেরপুর ডটকম।
সিনথিয়া