
প্রতিবন্ধীদের ক্যারিয়ার গঠনের উর্বর খাত ই-কমার্স
দেশের মোট জনসংখ্যার ৭ ভাগ প্রতিবন্ধী। কর্মসংস্থানের বাহিরে এই বিপুল সংখ্যক মানুষ রেখে অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়া কষ্টকর। তাই প্রতিবন্ধীদের শক্তির জায়গাগুলো চিহ্নিত করে তাদেরকে কর্মসংস্থানে যুক্ত করা জরুরি।
এতে করে তারা পরিবার বা সমাজের বোঁঝা হয়ে থাকবে না। বরং আর্থিক ভাবে স্বাধীন হয়ে উঠবে। যা দেশের অর্থনীতিতে দারুণ ভূমিকা রাখবে। সে সাথে তাদের দিকে করুণা))) দৃষ্টিতে তাকানোর সুযোগ থাকবে না বা নিজেরাও তা মনে করবে না।
প্রতিবন্ধীদের গৃহে বসে কাজ করার জন্য ই-কমার্স হতে পারে অন্যতম ক্ষেত্র। ই-কমার্সের বেশিভাগ দিকগুলোতে ’হোম অফিস’ করবার সুযোগ রয়েছে। তাই বাসা থেকে বের হওয়ার প্রয়োজন নেই এবং পারিবারিক সহযোগীতাও গ্রহণ করতে পারবে প্রতিবন্ধীরা।
লক্ষ্য করলে দেখা যায়, প্রতিবন্ধীরা কোন না কোন দিকে বেশ প্রতিভাবান। কেউ পড়তে পছন্দ করে, কেউ লিখতে ভালবাসে আবার কেউবা ডিজাইন ও কোডিং এর মতো কাজগুলো করতে পারে। তাই তাদের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো লাভবান হতে পারে। এতে করে সেই প্রতিষ্ঠান উপকৃত হওয়ার পাশাপাশি উপকৃত হবে প্রতিবন্ধী মানুষটিও।
প্রতিবন্ধীদের ইন্টারনেট ব্যবহারে অভ্যস্ত করতে হবে। যেন নিজেরাই দক্ষতা প্রমাণের মাধ্যমে নিজের কর্ম ঠিক করে নিতে পারে এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে নিজের কাজ করতে পারে। তাহলে পরাশ্রয়ের প্রয়োজন হবে না।
কনটেন্ট তৈরিতে বেশি ভূমিকা রাখতে পারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা। কারণ ই-কমার্সে কনটেন্টের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। কনটেন্ট বলতে আর্টিকেল (অনুচ্ছেদ), ছবি, ভিডিও, পিডিএফ ইত্যাদি। তারা এ কাজগুলো ঘরে বসে করতে পারে। কেউ হয়তো লিখতে পারে বেশ ভালো, কেউবা এনিমেশন ভিডিও করতে পারে আবার কেউবা ছবি তৈরিতে ভালো। এই শক্তিগুলো একসাথে করার মাধ্যমে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এগিয়ে যাওয়ার পাশপাশি তাদের খরচও কমে আসবে। যেহেতু প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অফিসে আসা যাওয়ার প্রয়োজন হবে না তাই প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধরণের খরচ বেঁচে যাবে।
দেশের ই-কমার্স বিজনেস গুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নির্ভর। আর এফ-কমার্স তো সম্পূর্ণ ফেসবুক নির্ভর। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচুর কাজ করতে হয়। যেমন নিয়মিত পোস্ট করার পাশাপাশি কমেন্টের উত্তর দেওয়া, মেসেজগুলোর রিপ্লাই দেওয়াসহ অনেক কিছু। এই কাজগুলো ঘরে বসে করতে পারে প্রতিবন্ধীরা। তাছাড়াও ডাটা সংগ্রহেও তারা ব্যাপক ভাবে ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রত্যেকটি ব্যবসায় কাস্টমার সাপোর্ট বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত। প্রতিবন্ধীরা সেই কাজটি করতে পারে দারুণ ভাবে। ই-কমার্সে প্রায় সবদিকে ই-কমার্স প্রতিবন্ধীদের কাজ করার সুযোগ রয়েছে। তাই বলা যায় প্রতিবন্ধীদের ক্যারিয়ার গঠনের উর্বর খাত ই-কমার্স।
লেখকঃ ফ্রিল্যান্সার লেখক ইপ্রফিট এবং স্বত্বাধিকারী, আওয়ার শেরপুর ডটকম।
সিনথিয়া