বিপদে মানুষকে সহযোগিতার শিক্ষা দেয় কিশোর ক্লাসিকস

কিশোর ক্লাসিকস সিরিজ ভেবেচিন্তে কাজ করার ব্যাপারটাকে সবসময়ই গুরুত্ব দিয়ে থাকে।সাধারণ মানুষেরা যদি নিজেদের জীবনে এই সিরিজটাকে নিয়মিত পড়ালেখা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন,তাহলে তারা জীবনে অনেকবেশি উপকৃত হবেন।

এই সিরিজের গল্পে থাকা নৈতিক শিক্ষাগুলো একজন কিশোরকে তার জীবন অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশের প্রথম থেকেই সুন্দর,সফল একটা জীবনের জন্য প্রস্তুত করা শুরু করে।

ছোট থেকে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে না উঠায় এখনকার বাচ্চারা মোবাইল কিংবা ইলেকট্রনিকস ডিভাইসের প্রতি বেশি মনোযোগী হয়ে উঠছে।যার ফলে তাদের মধ্য থেকে সৃজনশীলতা,কাজের প্রতি একাগ্রতা কিংবা উপস্থিত বুদ্ধি,ইতিবাচক মানসিকতা,কৌশলী হওয়ার মতো গুণাবলি অর্জন থেকে তারা দূরে সরে যাচ্ছে।

যারা শিক্ষিত তারাই মূলত সভ্যসমাজে বসবাস করে।সভ্য বলতে তাদেরকে বোঝায় যাদের আচার-আচরণে রয়েছে মানবিকতা,সহনশীলতা,ইতিবাচকতা।যারা কাজ করে নিজেদের জ্ঞানীয় বিবেক-বুদ্ধি দিয়ে।বিবেকবর্জিত সকল মানুষই পরিত্যাজ্য।আর মানুষ সভ্য হয় তখন,যখন তারা শিক্ষার সংস্পর্শে আসে।

লোভ নামক এই নেতিবাচক অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সেবা প্রকাশনীর `কিশোর ক্লাসিকস সিরিজ` আমাদেরকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করতে পারে।এই সিরিজে থাকা একেকটা গল্প বিভিন্ন ঘটনার আঙ্গিকে লেখা,যার ফলে সব গল্পের মূলভাব কিংবা নৈতিক শিক্ষা সবসময় একরকম হয় না।প্রতিটা গল্প আমাদেরকে আলাদা আলাদা উপদেশ দেয়।

জীবনে এগিয়ে যেতে হলে কিংবা ভালো থাকতে হলে সবার সম্মিলিত প্রয়াসের দরকার আছে।প্রতিটা মানুষ যখন নিজ নিজ জায়গা থেকে নিজেদের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটানোয় উৎসাহী হবে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করা শুরু করবে তখন সমাজ আপনা আপনিই সুন্দর হয়ে উঠতে বাধ্য হবে।যার প্রভাব পড়বে গোটা রাষ্ট্রের উপর।

যে ব্যক্তি দুঃসময়ে শক্ত হয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারে,সত্যিকারের সুখ সঠিক সময়ে তার কাছে এসেই ধরা দেয়।বর্তমান সময়ে সৃজনশীলতার চর্চা কমে গেছে প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহারে।আর এর কারণেই মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে হতাশা,ইংরেজিতে যাকে বলে ডিপ্রেশন।

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যদি নিজেদের অধ্বস্তনদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখেন,তাদের ভুলগুলো ধরিয়ে দিয়ে সুন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে শোধরানোর উপায় দেখিয়ে দেন তখন কর্মীদের মনে তাদের বসের জন্য শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হয়।আর এতে করে কর্মীদের কাজের গতি যেমন বেড়ে যাবে তেমনি কাজের মান আগের থেকেও ভালো হবে।এটা কিন্তু গবেষণাতেও প্রমাণিত।

বন্ধু নির্বাচনে খুব সতর্ক থাকা উচিত সবার।তার উপর সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে অনেকেই বন্ধুত্বের মিষ্টি মিষ্টি কথা শুনে শেষমেশ প্রতারণার শিকার হয়।এমন ঘটনা চারপাশে অহরহ ঘটছে,আমরা সবাই জানি।তবে সবাই যে খারাপ হবে,এটা ভাবাও যুক্তিসঙ্গত নয়।

কোনো লক্ষ্য নিয়ে যখন কয়েকজন মানুষ একত্রে কাজ করা শুরু করে, তখনই গঠিত হয় একটা টিম।আর এই টিমকে তখন সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য দরকার নেতৃত্বদানের দক্ষতা।লিডারশীপ এমন একটা গুণ,যা সবার মধ্যেই থাকে।কিন্তু এটা এমনি এমনিই বেরিয়ে আসে না,এর জন্য প্রয়োজন হয় নিয়মিত চর্চার।

এই সিরিজের গল্পগুলো আমাদের বাস্তব জীবনকে পুঙ্খানুপুঙ্খরুপে ফুটিয়ে তোলে।তাই খুব সহজেই এই গল্পগুলো থেকে নেওয়া উদাহরণ নিজেদের জীবনের সাথে মিলানো যায়।একেকটা গল্পের বিশেষত্ব একেকরকম।ভিন্ন ভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে গল্পগুলো গড়ে উঠেছে।

যাঁরা জীবনে সফল হয়,তাঁদের প্রত্যেককেই কঠিন প্রতিকূল পরিবেশের মুখোমুখি হতে হয়েছে।আমাদের জীবনটাই এভাবে সাজিয়ে দিয়েছেন সৃষ্টিকর্তা যে,একটার পর একটা সমস্যা জীবনে আসতেই থাকবে।আমরা সেগুলোকে মোকাবেলা করে কতদূর টিকে থাকতে পারি,সেটা হচ্ছে আসল বিষয়।

যদি ফোনের বদলে রঙিন বই বাচ্চাটার হাতে তুলে দেওয়া হতো, সময়ে অসময়ে বাবা-মা কিংবা পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বাচ্চাটার সাথে বই নিয়ে খেলা করতো,একসাথে পড়ার চেষ্টা করতো বাচ্চাটা কিন্তু তাহলে বই পড়ুয়া হিসেবেই বেড়ে উঠতো।

সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় ১৯ টি দেশের ৪ হাজার মানুষের উপর একটি গবেষণা করে জানতে পেরেছে যে, কেউ যদি কোনো বিষয়ে মানসিক চাপে থাকে,তাহলে গান শোনা অথবা অন্যান্য কাজ করার বদলে বই পড়ার ফলে সেই চাপ প্রায় ৬৮ ভাগ দ্রুত কমিয়ে আনা সম্ভব।

কিশোর ক্লাসিকস গল্পের মূল নীতিগত শিক্ষা হচ্ছে-প্রতিকূলতার ভিড়ে টিকে থাকা।জীবন যখন আছে,তখন এতে নানা ধরনের জটিলতা বিরাজ করবেই।সবসময় জীবন এক রকম চলবে না।দুঃখ,প্রতিবন্ধকতা সবার জীবনেই কমবেশি আছে এবং থাকবে।এটাই দুনিয়ার চিরাচরিত নিয়ম।এর মাঝেই আমাদেরকে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হবে।

সবার মনে হয় শিক্ষালাভের জন্য সেসব বই প্রয়োজন যা অনেক তথ্যবহুল,যেমনটা পাঠ্যবই আর কি।গল্পের বইয়ে শেখার মতো আছে কি?গবেষণায় প্রমাণিত মানুষের বুদ্ধির বিকাশ,মনস্তত্ত্বের প্রভাবক হিসেবে কাজ করে গল্পের বই।একটা শিশু যখন ছোট থাকে তখন এই বইগুলো এক রকম কাজ করে আবার বড় হওয়ার একেক পর্যায়ে একেক রকম ভূমিকা রাখে এই জাতীয় বই।