
বিশেষ দিনের সারপ্রাইজ দিতে অর্ডার দেন
অনলাইনে হোমমেড কেকের চাহিদা বাড়ছে দিনে দিনে। এ খাতে কিছু চ্যালেঞ্জের সাথে আছে প্রচুর সম্ভাবনা। প্রতিটি চ্যালেঞ্জ নিজ অবস্থান থেকে সামলে নেওয়ার চেষ্টায় থাকেন উদ্যোক্তারা।
ক্রেতাদের বিশেষ দিনগুলো আরও বিশেষ ভাবে উপভোগ করাতে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করেন কেকের এফ-কমার্স উদ্যোক্তারা। অনেক সময় তারাই ভূমিকা রাখেন কেক পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে ক্রেতার শুভাকাঙ্ক্ষীকে বিস্ময় করতে।
হোম মেড কেকের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা নিয়ে ইপ্রফিটের সাথে কথা বলছেন ইলিউস্ত্রে প্রমেসের স্বত্বাধিকারী ফাতেমা সুলতানা। তিনি বলেন, যথেষ্ট প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে নিজের উদ্যোগ পরিচালনা করতে হয়। কাস্টমার সার্ভিস ঠিক রাখতে গ্রহণ করতে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ। এ ক্ষেত্রে পারিবারিক সহযোগীতা খুবই দরকার হয়। আমাদের তৃতীয় পক্ষের ডেলিভারি পদ্ধতি এখনো কেকের জন্য উপযোগী নয়। ক্রেতার কাঙ্ক্ষিত কেকটি অক্ষত অবস্থায় পৌঁছে দিতে বেশ অসুবিধার মুখে পড়তে হয়।
তিনি আরও বলেন, কেকের গুণগত মান, স্বাদ, নকশা এবং কাস্টমার সার্ভিস নিয়ে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হয় প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ডের সাথে। অনেক সময় দোকান বা বেকারির কেকের সাথে দামের তুলনা করেন ক্রেতারা। তাদের বোঝাতে কিছুটা কষ্ট হয়। তাই বলা যায় এফ-কমার্স কেক উদ্যোক্তাদের প্রায় প্রতিটি মুহূর্ত চ্যালেঞ্জিং
বেকারি বা দোকানের চেয়ে হোম মেড কেকের দাম বেশি কেন? এ প্রশ্নের জবাবে ফাতেমা বলেন, বেকারিতে একসাথে অনেকগুলো কেকের উপকরণ কেনা হয়। যার কারণে তাদের খরচ সাশ্রয় হয়। আর আমরা একজন ক্রেতার জন্য কেক তৈরির উপকরণ ক্রয় করি। তাছাড়াও স্বাদ বাড়াতে অস্বাস্থ্যকর কিছু মেশানোর সুযোগ নেই। যা করতে হয় পিউর উপকরণের মাধ্যমে। মূলত এ কারণে আমাদের খরচ বেড়ে যায় কিছুটা। তবে আশার কথা হচ্ছে দোকান এবং হোম মেড কেকের মান, স্বাদ, নকশার পার্থক্য বুঝতে পারছে ক্রেতারা। এ কারণে এখন কিছুটা অসুবিধা কমে আসছে।
কেক কেনাকাটায় ক্রেতাদের আকৃষ্ট করেন কীভাবে? উত্তরে এই নারী উদ্যোক্তা বলেন, উদ্যোগ যেহেতু অনলাইন নির্ভর তাই অনলাইনের মাধ্যমেই ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করি। কোন কাস্টমারের জন্য কেক তৈরি করলে সেটার ফটোগ্রাফি করি আন্তরিক ভাবে, কেকের গল্পটি তোলে ধরি, ক্রেতাদের নিয়ে ফেসবুকে লিখি। মূলত কনটেন্টের মাধ্যমেই নতুন ক্রেতা পেয়ে থাকি। তাছাড়াও পুরাতন ক্রেতাদের রেফারেন্স থেকেও অর্ডার আসে।
ক্রেতারা যেন বার বার ফিরে আসে এর জন্য কী পদ্ধতি অবলম্বন করেন? ফাতেমা সুলতানা বলেন, প্রতিনিয়ত ক্রেতা সন্তুষ্টির দিকে বিশেষ নজর রাখতে হয়। ক্রেতার বিশেষ দিনগুলো শুভেচ্ছা বার্তা এবং উপহার পাঠাতে হয়। তাদের সাথে যোগাযোগ রাখতে হয় এবং তাদের ফিডব্যাক নিতে হয়।
কেকের চ্যালেঞ্জগুলো কী? এ প্রশ্নের জবাবে ফাতেমা জানান, কেকের মান এবং দাম স্থিতিশীল রাখার ব্যপারে সচেতন থাকতে হয়। সর্বদা সক্রিয় থাকতে হয় অনলাইনে। অনেক সময় দেখা যায় প্রিয়জনের বিশেষ দিনে সারপ্রাইজ দিতে অর্ডার দেন প্রবাসী ক্রেতারা। তারা মেসেজ দেন তাদের সুবিধা মতো সময়ে। দেশে অবস্থান করা ক্রেতারাও রাতদিন যেকোন সময় অর্ডার করেন।
ক্রেতার হাতে সঠিক ভাবে কেক পৌঁছে দেওয়া। সেই সাথে ক্রিমের স্বাদ ও মান অনুষ্ঠান পর্যন্ত অক্ষুন্ন রাখা অন্যতম চ্যালেঞ্জ। তা নিয়ে প্রায় সময় বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়। কারণ রাস্তার যানজট এবং প্রচন্ড গরমে কেকের ক্রিম গলে যেতে পারে। সাবধানে বহন করা না হলে কেক নকশা নষ্ট হতে পারে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সামনে আগাতে হয়।
হোমমেড কেকের সম্ভাবনাগুলো কী? ফাতেমা সুলতানা জানান, বিশেষ কিছু সুবিধার কারণে হোম মেড কেকে নির্ভরশীল হচ্ছে ক্রেতারা। হোম মেড কেকগুলো স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ঘরোয়া পরিবেশে তৈরি করা হয়। যেহেতু অর্ডার নিশ্চিত হওয়ার পর কেক তৈরির উপকরণগুলো সংগ্রহ করা হয় তাই মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার সুযোগ নেই।
ক্রেতারা তাদের মতো করে নকশা, সাইজ ও ফ্লেভারে করিয়ে নিতে পারে। সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য হোম মেড কেকে নির্ভরতা বাড়ছে দিনে দিনে। অন্যতম সুবিধা হচ্ছে ব্যস্ততার মাঝে অফিস বা যেকোন কাজে থাকা অবস্থায় অর্ডার করে নিশ্চিত থাকতে পারে আমাদের ক্রেতারা। সরাসরি ক্রেতা-বিক্রেতার কথোপকথন হয় যেকোন সময়। মূলত এসব কারণে হোম মেড কেক ব্যবহারে ঝুঁকছেন ক্রেতারা।
লেখকঃ ফ্রিল্যান্সার লেখক ইপ্রফিট এবং স্বত্বাধিকারী, আওয়ার শেরপুর ডটকম।
সিনথিয়া